রুবেল মিয়া: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভোগান্তির আরেক নাম ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি। রোগীদের পথরোধ করে হাত থেকে প্রেসক্রিপশন (ব্যবস্থাপত্র) ছিনিয়ে নিয়ে ছবি তোলাই যেন তাদের মূল কাজ। কোনোভাবেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা যেনো মানছেই না। ফলে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়,সপ্তাহের সাতদিনই চিকিৎসকের কক্ষের সামনে ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিড় লেগেই থাকে। রোগীরা চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হলে তাদের প্রেসক্রিপশন(ব্যবস্থাপত্র) নিয়ে টানাহেঁচড়া করেন সবাই। ছবি তোলেন, দেখেন কোন কোম্পানির ওষুধ লেখা হয়েছে।
আবার কেউ কেউ রোগীকে অপেক্ষায় রেখে চিকিৎসকদের সাথে সাক্ষাৎ সেরে নিচ্ছেন। প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে এসব প্রতিনিধিদের নানান অনিয়মের দৃশ্য। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। এভাবে তারা প্রতিনিয়তই চিকিৎসক ও রোগীদের চিকিৎসা সেবায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন।
এভাবে প্রায় প্রতিদিনই সরকারি হাসপাতালটিতে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন জানান, তার মা'কে নিয়ে চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই ১০/১৫ জন লোক এসে তার হাতে থাকা প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করেছে। এমন একটা পরিস্থিতি করেছিলো যেনো প্রেসক্রিপশন ছিঁড়ে ফেলার অবস্থা৷ হাসপাতালে এমন বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি কাম্য নয়৷
সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আফরিজ সুলতানা নামের আরেকজন নারী রোগী জানান, চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর চেয়ে বেশি ভীড় জমায় মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভরা। তাদের কারণে আমাদের মতো সাধারণ রোগীরা বেশ ক্ষুব্ধ। তাদের জন্য ডাক্তারদের সাথে ভালোভাবে কথা বলাও যায় না। প্রেসক্রিপশন নিয়ে বের হলেই তারা চারদিক থেকে ছিনতাইকারীর মতো ঘিরে ফেলে৷
কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের অনুরোধ এসব রিপ্রেজেনটেটিভদের দৌরাত্ম্য থেকে যেনো আমাদের মুক্তি দেন৷
এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন আহমেদ তিথী বলেন, হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সপ্তাহে দু'দিন আসার জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও ৩১ শয্যার জনবল নিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করা হচ্ছে। জনবল তুলনামূলক কম থাকায় সার্বিক ব্যবস্থাপনায় একটু ঘাটতি হচ্ছে। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির সপ্তাহে দু'দিন থাকার কথা থাকলেও বাকি দিনগুলোতে হাসপাতাল চত্বরে আমাদের অবর্তমানে অবস্থান করে৷
তিনি আরও বলেন, আমি আসার পর থেকে দালালের ব্যাপারে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিয়েছি। এ ব্যাপারে আরও কঠিন ব্যবস্থা নিব।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন